রাসুল সাঃ এর জীবনী
আমাদের এই ব্লগ টি রাসুল সাঃ এর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হবে যদি কোন ভুল ক্রটি থাকে ধরিয়ে দিবেন।
রাসুল সাঃ এর জীবনী
রাসুল সাঃ এর নবুয়াত লাভঃ
হজরত
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়তপ্রাপ্ত হন চল্লিশ বছর বয়সে (৬১০
খ্রি.) এবং হেরা পর্বতের গুহায় তার কাছে প্রথম অহি নাজেল হয়। সুরা আলাকের প্রথম
পাচ আয়াতঃ [পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার
নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিন্ড থেকে। পাঠ করুন,
আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের
সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে
জানত না]। প্রথম প্রত্যাদেশ প্রাপ্তির পর তিনি গভীরভাবে
বিচলিত হয়ে পড়লেন। কম্পিত ও ভীত-সন্ত্রস্ত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রী বিবি খাদিজাকে (রা.) সব ঘটনা বর্ণনা করলেন। ঘটনা শ্রবণের পর
পবিত্রতা রমণী খাদিজা (রা.) বুঝতে পারলেন যে, তার
স্বামীর ওপর মহান সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছে। তিনি তাকে সাহস ও উৎসাহ দান
করলেন। অতঃপর তিনি তার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা-বিন-নওফেলের কাছে এ সংবাদ পেঁৗছালেন।
ওয়ারাকা ছিলেন তৎকালীন আরব বিশ্বের প্রখ্যাত পণ্ডিত। ইহুদি ও খ্রিস্টধর্ম সম্বন্ধে
তাকে বিশেষজ্ঞ বলে ভাবা হতো। এ ঘটনা শ্রবণে তিনি অভিমত ব্যক্ত করলেন যে, মুসা (আ.) ও ঈসা (আ.) অনুরূপ ঐশীবাণী লাভ করেছিলেন। তাঁর এ উৎসাহসূচক
কথাবার্তা ও আশ্বাসের বাণীতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বস্তির
নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।
বর্ণনায়
আরও উল্লেখ আছে প্রথম বাণী লাভের পর মুহাম্মাদএতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে
নিজ গৃহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেন।
বারবার বলতে থাকেন, "আমাকে আবৃত
কর"। খাদিজা মুহাম্মাদের এর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাঁকে নবী
হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য মুহাম্মাদকে নিয়ে খাদিজা নিজ চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফেলের কাছে যান। নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন নবী। তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী
প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তাঁর কাছে দ্বিতীয় বারের মতো স্রষ্টার
বাণী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় সূরা মুদ্দাস্সির এর কয়েকটি
আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন মুহাম্মাদ।
গোপনে ইসলাম প্রচারঃ
প্রত্যাদেশ
অবতরণের পর রাসুল (সাঃ) বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে। কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের
ভীত ধ্বংস করা ব্যতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোনো উপায় ছিল না। তাই প্রথমে
তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে গোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন।
মুহাম্মাদ রাসুল (সাঃ)এর আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন তার সহধর্মিণী
খাদিজা।এরপর মুসলিম হন চাচাতো ভাই এবং তাঁর ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর আলী, ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী
পৌঁছে দেওয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ মেনে নেয় নি, এ সভাতে শুধু একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো আলী।ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ
বন্ধু আবু বকর।এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এবং এই প্রচারকাজ
চলতে থাকে সম্পূর্ণ গোপনে।
প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারঃ
পবিত্র
কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ
“আপনি
আপনার আদিষ্ট বিষয় প্রকাশ্যভাবে শুনিয়ে দিন”। (সুরা হিজর-৯৪)
আল্লাহর
নির্দেশের পর প্রকাশ্য দাওয়াত শুরু করেন। তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেওয়ার পর রাসুল
(সাঃ) প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরণের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল।
রাসুল (সাঃ) সাফা পর্বতের উপর দাঁড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে
বলেন যে,
"আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র
রাসুল"। কিন্তু এতে সকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায়।বেশিরভাগ
মক্কাবাসী তাঁকে অবজ্ঞা করে, তবে তাঁর অল্প সংখ্যক
অনুসারীও হয়। মূলত তিন শ্রেণীর লোকজন তাঁর অনুসারী হয় এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে:
ছোট ভাইগণ ও বৃহৎ সওদাগরদের পুত্ররা; যেসব ব্যক্তি তাদের সম্প্রদায়ের শীর্ষ স্থান থেকে চ্যুত হয়েছেন বা শীর্ষ স্থানে
পৌঁছাতে পারেননি এবং দুর্বল ব্যক্তিরা, বিশেষ করে নিরাপত্তাহীন বিদেশিরা।
মুসলমানদের
সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্বি পেতে লাগল।এক সময় মুসলমানদের সংখ্যা ৪০ জন হল।এ ক্ষুদ্র
ইসলামী জামাআত পবিত্র কাবাগৃহের সামনে উচ্চস্বরে তাকবীর দিলে কাফের দের সাথে
মারাত্নক যামেলা বেঝে যায়।এ ঘটনায় হযরত হারেস ইবনে আবি হালা শহীদ
হন।পরবর্তীতে আবু তালিবের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আবু তালিবের সমর্থনঃ
‘و
أنذر عشيرتك
الاقربين’ -এ আয়াতের ভিত্তিতে যখন মহানবী (স.) তাঁর সকল আত্মীয় স্বজনকে আমন্ত্রণ
জানিয়েছিলেন সে সভায় আবু তালিব (আ.), হযরত মহানবী (স.) এর
পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়ে আবু লাহাবের কথার কঠিন জবাব দিয়ে তাকে চুপ করিয়ে দেন।
কুরাশদের বিরোধিতার কারণঃ
কুরাইশ
বংশের মধ্যে ১৫টি গোষ্ঠীর বর্ণনা পাওয়া যায়। তার মধ্যে নবী করিম (সা.)-এর হাশেমি
গোষ্ঠীর আবু লাহাবকে নিয়ে মোট সাতটি গোষ্ঠীর নেতারা ইসলাম উত্খাত করার ষড়যন্ত্রে
লিপ্ত ছিল। তাঁর প্রবল শত্রুর সংখ্যা বেশি ছিল মাখজুমি ও শামস গোষ্ঠীতে। আসলে কাবা
শরিফকে কেন্দ্র করে কুরাইশদের আর্থিক স্বার্থ ছিল বলেই ইসলাম ধর্মে তাদের সর্বনাশ
দেখতে পেয়েছিল। অন্যদিকে হাশেমি গোষ্ঠীর একজন এতিম নিরাশ্রয় ব্যক্তির কাছ থেকে
তারা ধর্মের শিক্ষা নিতে আগ্রহী ছিল না। সে জন্য কুরাইশদের মধ্যে শত্রুপক্ষীয়
প্রধান দুই গোষ্ঠী মাখজুমি ও আবদ শামস—যারা জনসংখ্যায়, ধনে ও সম্পত্তিতে ছিল তুঙ্গে, তারা নতুন
ধর্ম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে কঠোরভাবে। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ও গুরুত্ব কোনো
প্রকারে তারা নষ্ট করতে চায়নি। তাই তারাই সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু হয়ে ওঠে ইসলামের।
রাসুল (সাঃ) এর পুর্নাংগ জীবনী জানতে আমাদের এই অ্যাপ্টি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন। https://play.google.com/store/apps/details?id=com.duappsmedia.mohanobi

Comments
Post a Comment